খৃস্টান মিশনারীদের উপর হামলা করবো কি?

প্রশ্ন নং- ৩১৯০


আসসালামু আলাইকমু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ!
আমি জিজ্ঞেস করতে চাচ্ছি: মুসলমানদের খৃস্টান বানানোর প্রচেষ্টার পর, পাশাপাশি আমাদের যেসব বোন মুসলমান হয়েছে তাদের অপহরণ ও হত্যার পর- যেমন: আমাদের বোন ওয়াফা কুসতুনতিন, কামিলিয়া এছাড়াও আরো অনেকে- শরীয়তে মিশরের খ্রিস্টান পাদ্রীদের কি বিধান হবে? তারা কি হরবী যে, যেকোনভাবে তাদেরকে হত্যা করে দেয়া যাবে? …


উত্তর:

الحمد لله رب العالمين وصلى الله على نبيه الكريم وعلى آله وصحبه أجمعين وبعد:

সম্মানিত ভাই, এসব খৃস্টান, যাদের অনিষ্ট থেকে মুসলমানগণ নিরাপদ নয়, তাদের সাথে কোন আমান-অঙ্গীকার নেই। তাদের জানা, মাল ও ইজ্জত-আব্রু মুসলমানদের জন্য হালাল। আমান-অঙ্গীকারের শর্ত হল মুসলমানদের কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যে-ই মুসলমানদের কষ্ট দেবে, তার আমান-অঙ্গীকার ভেঙে যাবে। আর অনিষ্টকারী থেকে অনিষ্টের বদলা নেয়া বৈধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যে কেউ তোমাদের উপর আক্রমণ করবে, তোমরাও তার উপর অনুরূপ আক্রমণ করবে।’ অতএব, সম্মানিত ভাই, যেসব খৃস্টানের বিবরণ আপনি দিয়েছেন, উপরোক্ত মূলনীতি অনুযায়ী তাদের প্রাণ সংরক্ষিত নয়।

তবে আমি দু’টি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলার ব্যাপারে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবো:

প্রথমটি: যে কেউ জিহাদি আমলে শরীক হতে চায়, তার উচিৎ- কোন জিহাদি জামাতের সাথে যোগ দিয়ে জামাতভিত্তিক কাজ করতে আগ্রহী হওয়া; মুজাহিদদের পক্ষ থেকে নির্ধারিত নিয়ম-নীতির অধীন নয় এমন ব্যক্তিকেন্দ্রিক কাজ থেকে বেঁচে থাকা।

দ্বিতীয়টি: সবখানের মুজাহিদ ও তাদের আনসারদের উচিৎ হল- তাদের সকল জিহাদি পদক্ষেপ নির্দিষ্ট লক্ষ্য, মাধ্যম ও মারহালা সম্বলিত মজবুত রণকৌশলসমৃদ্ধ হওয়া। পূর্ব পরিকল্পনা বিহীন ও সাময়িক প্রতিক্রিয়ামূলক না হওয়া, যার শেষ পরিণতি হবে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া।

তবে কোন মুজাহিদ ভাইয়ের পক্ষে যদি সম্ভব হয় (কৌশলগত উদ্দেশ্য ও নিরাপত্তা ভঙ্গ না করে)1 এমন কারো থেকে বদলা নেয়ার, যে প্রত্যক্ষভাবে বা অন্যকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলমানদের উপর সীমালঙ্গন করছে- তাহলে সেক্ষেত্রে তার হাত যেন না কাঁপে। কেননা, এর মাধ্যমে ইসলামের নুরসত ও মুসলমানদের প্রতিশোধ অর্জন হবে। যে মুজাহিদ এমনটা করবে, আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা তিনি যেন তা কবুল করে নেন। والله أعلم والحمد لله رب العالمين.

তবে2 সব সময়ই যুবকদের প্রতি আমর নসীহত– দুশমনদের ক্ষতির পরিমাণ, অপারেশনের গুরুত্ব ইত্যাদি বিবেচনা না করে শুধু সহজসাধ্য হওয়ার উপর নির্ভর করেই যেন তারা তাদের পদক্ষেপগুলো না নেয়। ফলত তারা যুদ্ধে লিপ্ত নয়, দুর্বল এবং এমনসব লোক যাদের কোন ভূমিকাই নেই- এমন লোকদের উপর হামলা করে বসবে, যাদের উপর হামলা করার কোন মূল্য নেই। ফলশ্রুতিতে মুজাহিদদেরকে বা কোন কোন ভূখণ্ডে মুসলমানদেরকে এর চড়া মূল পরিশোধ করতে হবে। জিহাদ, মুজাহিদ, ইসলাম ও মুসলমানদের কোন ফায়েদা ছাড়াই তাদের জীবন-প্রাণ, হায়াত ও শক্তি-সামর্থ্য ব্যয় করতে হবে।

এ কারণে আপনার প্রতি আমার নসীহত- আপনি আপনার ভূখণ্ডের অভিজ্ঞ, জ্ঞানী, আমানতদার ও জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের সাথে আপনার জিজ্ঞাসিত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত পরামর্শ করুন। অপারেশন বৈধ- শুধু এতটুকুর দিকে তাকাবেন না, বরং পাশাপাশি ইসলাম, মুসলমান, জিহাদ ও মুজাহিদদের মাসলাহাত এবং অপারেশনের ভবিষ্যত পরিণাম ও পরিণতির দিকেও তাকাতে হবে। আল্লাহ তাআলা আপনাকে দ্বীনের নুসরতের তাওফিক দান করুন।


মূল প্রশ্নের উত্তর প্রদানে:
শায়খ আবুল মুনযির আশশানকিতি
শরয়ী বিভাগ, মিম্বারুত তাওহিদ।


  1. ব্রাকেটের এই অংশটি সম্পাদকের, মূল শাইখের নয়। 
  2. এখান থেকে শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন নং ১৫৪৫ থেকে প্রাসংগিক আলোচনা আনা হয়েছে। 

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

Website Powered by WordPress.com.

Up ↑

Design a site like this with WordPress.com
শুরু করুন