সংশয় নিরসন : বাংলাদেশের ভূমি যুদ্ধের জন্য উপযোগী নয় বলে ফরজ জিহাদ ছেড়ে দিবেন?

পরিচিত আলেম বন্ধুদের প্রায়ই প্রায়ই শুনি যে আফগানিস্তানে জিহাদ সম্ভব হয়েছে কারণ ঐখানে প্রচুর পাহাড় পর্বত রয়েছে, তাছাড়া রয়েছে অস্ত্রের প্রচুর প্রাপ্তি। এদেশে এসব নেই, তাই জিহাদের জন্য অনুপযুক্ত। ভুখন্ডগত এই অনুপযুক্ততা যে শুধু নিজের পরিচিত মহলেই যে শুনি তা না, তা ইলমের বটবৃক্ষ মুফতি আব্দুস সালাম চাটগামি(রহ) ও তার আলোচনায় এনেছেন। এখন কি ভূখণ্ডগতভাবে উপযুক্ত না বলে ক্বিতালের মত ফরয বিধানকে স্কিপ করে বিশাল বাড়ন্ত ও ভবিষ্যত মুসলিম প্রজন্মকে ত্বাগুতের হতে ছেড়ে দেয়া কি বিচক্ষণতা নাকি এই ভূখণ্ডকে কিভাবে উপযুক্ত করা যায় তা নিয়ে ফিকির করা উচিত?

অনুর্বর জমিকে কিভাবে চাষের উপযোগী করা যায় তা নিয়েও মানুষ চিন্তা করে, তাতে বিভিন্ন জৈব ও রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগে চাষের উপযোগী করে তোলে। পাহাড়ের ঢালুতে পানি জমে না বলে সেখানে চাষ করা যায় না। তাই বলে পাহাড়ি উপজাতিরা বসে বসে না খেয়ে মরে না। পাহাড়কে স্তরে স্তরে কেটে সেখানে জুম চাষ করে ফসল ফলায়।

এদেশে পাহাড় নেই তাই জিহাদ সম্ভব না। কিন্তু শামে কিংবা ইরাকে তো জিহাদ পাহাড়ে হয়নি, হয়েছে সমতলে। যে দেশে পাহাড় নেই সেখানে পাহাড়ের ভূমিকা পালন করতে পারে জনসমর্থন। গ্রামাঞ্চলগুলোতে এমনিতেই হাঁটলেও ভুখন্ডগতভাবে উপযুক্ততা কথা চিন্তায় আসে। নদীনালা, খালবিল, ঘন সবুজ গাছপালাবিশিষ্ট গ্রামাঞ্চলে মুজাহিদদের আশ্রয়স্থল হবে না কিংবা জিহাদ অনুপযুক্ত তা বলা যাবে না মোটেও। কিছুদিন আগে হেফাজতের আন্দোলনে আমরা দেখেছি ত্বাগুত প্রশাসন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে শহরের মধ্যে। গ্রাম, উপজেলা তার নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। তাছাড়া এমনিতেই এদেশের ত্বাগুতের প্রতি জনমানুষের রয়েছে তীব্র জনরোষ।

যদিও মুজাহিদ উমারাগণ এই ভূমিকে বর্তমানে কিছুটা কম উপযোগী তথা সাপোর্টিং ল্যান্ড হিসেবেই চিত্রিত করেন, কিন্তু এর মানে এই না যে এটা সারা জীবনই সাপোর্টিং ল্যান্ড থেকে যাবে। উপমহাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো মুহূর্তে সাপোর্টিং ল্যান্ড থেকে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ভূমিতে রূপান্তরিত হতে পারে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ ত্বাগুতের শক্তিকে হ্রাস করবেন।

রব্বে কারীম ইরশাদ করেনঃ

فَإِذَا لَقِيتُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فَضَرْبَ ٱلرِّقَابِ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَثْخَنتُمُوهُمْ فَشُدُّوا۟ ٱلْوَثَاقَ فَإِمَّا مَنًّۢا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَآءً حَتَّىٰ تَضَعَ ٱلْحَرْبُ أَوْزَارَهَاۚ ذَٰلِكَ وَلَوْ يَشَآءُ ٱللَّهُ لَٱنتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَٰكِن لِّيَبْلُوَا۟ بَعْضَكُم بِبَعْضٍۗ وَٱلَّذِينَ قُتِلُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَلَن يُضِلَّ أَعْمَٰلَهُمْ

অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না। (সুরাহ মুহাম্মাদ: ৪)

فَقَٰتِلْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفْسَكَۚ وَحَرِّضِ ٱلْمُؤْمِنِينَۖ عَسَى ٱللَّهُ أَن يَكُفَّ بَأْسَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ۚ وَٱللَّهُ أَشَدُّ بَأْسًا وَأَشَدُّ تَنكِيلًا
আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন। শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা (সুরাহ নিসা: ৮৪)

পরিশেষে, আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।


সংগৃহীতঃ এক মুওয়াহিদ ভাই

1 thoughts on “সংশয় নিরসন : বাংলাদেশের ভূমি যুদ্ধের জন্য উপযোগী নয় বলে ফরজ জিহাদ ছেড়ে দিবেন?

Add yours

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

Website Powered by WordPress.com.

Up ↑

Design a site like this with WordPress.com
শুরু করুন