আমি কি ঈমানদার নাকি ইমানের দাবিদার?

★ সুফিয়ান ইবন উয়াইনাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ্ তা’আলা চার তরবারী দিয়ে পাঠিয়েছেন। তন্মধ্যে একটি কাফের মুশরিকদের বিরুদ্ধে। যার প্রমাণ আলোচ্য আয়াত।দ্বিতীয়টি আহলে কিতাবদের বিরুদ্ধে। তার প্রমাণ সূরা আত-তাওবার ২৯ নং আয়াত তৃতীয়টি মুনাফিকদের বিরুদ্ধে যা সূরা আত-তাওবার ৭৩ ও সূরা আততাহরীমের ৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। চতুর্থটি বিদ্রোহী, সীমালংঘনকারীদের বিরুদ্ধে। যার আলোচনা সূরা আল-হুজুরাত এর ৯ নং আয়াতে এসেছে। [ইবন কাসীর]

★ উক্ত আয়াত কাফের ও মুশরিকদের বিরুদ্ধে ★

فَاِذَا انۡسَلَخَ الۡاَشۡہُرُ الۡحُرُمُ فَاقۡتُلُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَیۡثُ وَجَدۡتُّمُوۡہُمۡ وَ خُذُوۡہُمۡ وَ احۡصُرُوۡہُمۡ وَ اقۡعُدُوۡا لَہُمۡ کُلَّ مَرۡصَدٍ ۚ فَاِنۡ تَابُوۡا وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ فَخَلُّوۡا سَبِیۡلَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۵﴾

অতঃপর যখন নিষিদ্ধ মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর এবং তাদেরকে পাকড়াও কর, তাদেরকে অবরোধ কর এবং তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে বসে থাক। তবে যদি তারা তাওবা করে এবং সালাত কায়েম করে, আর যাকাত দেয়, তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা ৪ কি কাজের কথা বলেছেন

১) فَاقۡتُلُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَیۡثُ وَجَدۡتُّمُوۡہُمۡ
তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর

২) وَ خُذُوۡہُمۡ
এবং তাদেরকে পাকড়াও কর,

৩) وَ احۡصُرُوۡہُمۡ তাদেরকে অবরোধ কর
৪) وَ اقۡعُدُوۡا لَہُمۡ کُلَّ مَرۡصَدٍ এবং তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে বসে থাক।
★ উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা কাফের ও মুশরিকদের সাথে ৪টি আচরণের কথা উল্লেখ করেছেন,
হয়তো হত্যা, নয়তো পাকড়াও, কিংবা অবরোধ, অথবা তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে উৎপেতে বসে থাকার কথা বলেছে

★ আমি আল্লাহ তাআলার উক্ত আদেশের বিরোধিতা করে নিজে কাফের ও মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করলাম ও
অন্যদেরকে বন্ধুত্ব স্থাপনের পরামর্শ দিলাম কিংবা
যারা উক্ত আয়াতের উপর আমল করেছে তাদেরকে জঙ্গি, জি এম বি, ইত্যাদি উপাধি দিয়ে আল্লাহর বিধানের বিরোধিতা করলামএরপর কি আমি / আমরা ঈমানদার না দাবিদার? দ্বিতীয় আয়াত আহলে কিতাবদের বিরুদ্ধে।
তার প্রমাণ সূরা আত-তাওবার ২৯ নং আয়াত

قَاتِلُوا الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ لَا بِالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ لَا یُحَرِّمُوۡنَ مَا حَرَّمَ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ وَ لَا یَدِیۡنُوۡنَ دِیۡنَ الۡحَقِّ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ حَتّٰی یُعۡطُوا الۡجِزۡیَۃَ عَنۡ ‌یَّدٍ وَّ ہُمۡ صٰغِرُوۡنَ ﴿٪۲۹﴾

তোমরা লড়াই কর আহলে কিতাবের সে সব লোকের সাথে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান রাখে না এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম মনে করে না, আর সত্য দীন গ্রহণ করে না, যতক্ষণ না তারা স্বহস্তে নত হয়ে জিয্য়া দেয়।

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা ৩ শ্রেণীর ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেছেন

১) قَاتِلُوا الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ لَا بِالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ
তোমরা লড়াই কর আহলে কিতাবের সে সব লোকের সাথে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান রাখে না

২) وَ لَا یُحَرِّمُوۡنَ مَا حَرَّمَ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ
এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম মনে করে না,

৩) وَ لَا یَدِیۡنُوۡنَ دِیۡنَ الۡحَقِّ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ
আর সত্য দীন গ্রহণ করে না,

প্রশ্ন ঃ- উক্ত আয়াতে কয় শ্রেণীর ব্যক্তির সাথে ক্বিতালের আলোচনা এসেছে?
উত্তর ঃ- উক্ত আয়াতে ৩ শ্রেণীর ব্যক্তির ক্বিতালের কথা উল্লেখ আছে।

প্রশ্ন ঃ- হে আল্লাহ! তাদের সাথে কতক্ষন লড়াই করব?
উত্তর ঃ- حَتّٰی یُعۡطُوا الۡجِزۡیَۃَ عَنۡ ‌یَّدٍ وَّ ہُمۡ صٰغِرُوۡنَ ﴿٪۲۹﴾
যতক্ষণ না তারা স্বহস্তে নত হয়ে জিজয়া দেয়

তৃতীয় আয়াত মুনাফিকদের বিরুদ্ধে যা সূরা আত-তাওবার ৭৩ ও সূরা আততাহরীমের ৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।

یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ جَاہِدِ الۡکُفَّارَ وَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ اغۡلُظۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَ مَاۡوٰىہُمۡ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۷۳﴾

হে নবী, কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর এবং তাদের উপর কঠোর হও, আর তাদের ঠিকানা হল জাহান্নাম; আর তা কতইনা নিকৃষ্ট স্থান।
★ উক্ত আয়াতের উপর আমল করলাম না
এরপর ও কি আমি ঈমানদার না দাবিদার?

চতুর্থ আয়াত বিদ্রোহী, সীমালংঘনকারীদের বিরুদ্ধে।
যার আলোচনা সূরা আল-হুজুরাত এর ৯ নং আয়াতে এসেছে।

وَ اِنۡ طَآئِفَتٰنِ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اقۡتَتَلُوۡا فَاَصۡلِحُوۡا بَیۡنَہُمَا ۚ فَاِنۡۢ بَغَتۡ اِحۡدٰىہُمَا عَلَی الۡاُخۡرٰی فَقَاتِلُوا الَّتِیۡ تَبۡغِیۡ حَتّٰی تَفِیۡٓءَ اِلٰۤی اَمۡرِ اللّٰہِ ۚ فَاِنۡ فَآءَتۡ فَاَصۡلِحُوۡا بَیۡنَہُمَا بِالۡعَدۡلِ وَ اَقۡسِطُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُقۡسِطِیۡنَ ﴿۹﴾
আর যদি মুমিনদের দু’দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর বাড়াবাড়ি করে, তাহলে যে দলটি বাড়াবাড়ি করবে, তার বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি দলটি ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে মীমাংসা কর এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালবাসেন।

প্রশ্ন ঃ- প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ বাদি নেতা ও নেত্রীবৃন্দ উনারা যদি মুমিন হয়,
তাহলে যাদেরকে জঙ্গি, জি এম বি, বলে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরাও কিন্তু মুমিন ।
যেহেতু দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব ,এখন আপনাদের কাজ হলো উভয় গ্রুপের মাঝে মিমাংসা করা । যদি সমাধান না হয়, তাহলে আপনার কাজ হলো গণতান্ত্রিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি দলটি ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে মীমাংসা কর এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালবাসেন। এখন আপনি কি এ কাজটি করতেছেন?
আমি আমার দায়িত্ব পালন করলাম না
এরপর ও কি আমি ঈমানদার না দাবিদার?

★ আমি তাদের বিরোদ্ধে ক্বিতাল করলাম না, উক্ত আদেশ পালনের ইচ্ছা ও করলাম না, বরং যারা করে তাদেরকে জঙ্গি, জি এম বি, বলে তাদের বিরোধিতা করলাম, অথবা যারা বিরোধিতা করেছে তাদের সমর্থন /সহযোগীতা করলাম অথবা তাদের জন্য জেল জরিমানা ইত্যাদির ব্যবস্থা করলাম কিংবা তাদের যারা জেল জরিমানা করেছে তাদের সহযোগি হলাম এরপরও কি আমি ঈমানদার না দাবিদার?

★উক্ত বিধানগুলোর বিরোদ্ধে বিধান রচনা করলাম, বা উক্ত রচয়িতা বিধানগুলো বাস্তবায়নে বাধ্য করলাম, অথবা আল্লাহর দেওয়া বিধানগুলো বাস্তবায়নে বাধসাধলাম কিংবা যারা বাধসেধেছে তাদের সমর্থন করলাম
এরপরও কি আমি / আমরা ঈমানদার না দাবিদার ?

★উক্ত বিধানগুলোর বিরোদ্ধে বিধান রচনা করলাম, বা উক্ত রচয়িতা বিধানগুলো বাস্তবায়নে বাধ্য করলাম, অথবা আল্লাহর দেওয়া বিধানগুলো বাস্তবায়নে বাধসাধলাম কিংবা যারা বাধসেধেছে তাদের সমর্থন করলাম
এরপরও কি আমি / আমরা ঈমানদার না দাবিদার ?
Collected

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

Website Powered by WordPress.com.

Up ↑

Design a site like this with WordPress.com
শুরু করুন